জাবেদ তালুকদার, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে : আগামী ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবারই ব্যস্ত সময় পার করেন নবীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার কামাররা, তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের চিন্তা। প্রতিবারের মতো কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দ হচ্ছেনা কামারপাড়ায়। আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে ঠিকই তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি কিন্তু আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছেনা তাদের। নবীগঞ্জ পৌর শহরের নতুন বাজারস্থ কামার পাড়ার ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে এমনটাই জানান তারা।
সুকুমার চন্দ্র দেবের (কর্মকার) সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত বছরের মতো এবছর বিক্রি হচ্ছেনা, লকডাউনের কারনে পর্যাপ্ত পরিমানে জিনিস বানাতে পারিনাই, এখন পর্যন্ত তেমন একটা বিক্রি হচ্ছেনা। ঈদের আগ পর্যন্ত এই কয়েকদিন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। কোম্পানীর কারণে সামান্য লাভে জিনিস বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যে পণ্য একশত পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম এখন সেই পণ্যই নরমাল কোয়ালিটিতে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাখাল দেব নামে এক কামার জানান, লকডাউন আর বৃষ্টির কারনে আমাদের ব্যাবসায় ভাটা পড়েছে। ঈদকে সামনে রেখে অন্যন্যবারের মতো জিনিস বানাতে না পারলেও সামান্য পরিমাণ জিনিস বানানো হয়েছে। যা বানানো হয়েছে তাও বিক্রি হচ্ছেনা। সারা বছর কাজের চাপ থাকে না। যা লাভ এই ঈদ মৌসুমেই হয়। তবে এবার সেই লাভটুকুও হচ্ছেনা।
কামার দোকানদারদের অভিযোগ কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লা, লোহাসহ সকল জিনিসপত্রের দাম দাম বেড়েছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ঈদ উপলক্ষে দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কামারদের ব্যস্ততা দ্বিগুণ বাড়লেও বেচা-বিক্রি সেই আগের মতো স্বাভাবিকই রয়ে গেছে।