গোয়ালন্দে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জন গ্রেফতার

আইন-অপরাধ আরো ঢাকা সারাদেশ
শেয়ার করুন...

জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৯) দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩ যুবককে গ্রেফতার করেছে।

গত শনিবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে রোববার (২১ আগস্ট) রাত ২টার মধ্যবর্তী যে কোন সময়ে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে গত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে।

মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা এ মামলায় চিহিৃত চারজনসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুইজনকে আসামী করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেলার পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের আরৎপট্টি এলাকার মো. লাল মিয়া বেপারীর ছেলে মো. সজল বেপারী ওরফে শরীফ বেপারী (২৮), ঘোষপট্টি এলাকার আলতাফ ডাক্তারের ছেলে মিঠু (৩৮) ও উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের উত্তর উজানচর নতুন পাড়া এলাকার মৃত তোতা শেখের ছেলে মো. আলামিন শেখ (২৮)।

থানা সূত্রে জানা গেছে, বাদী একজন দিনমজুর প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার (২০ আগস্ট) কাজ শেষে বাড়িতে এসে রাতের খাবার খেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাত ১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে ঘরে নেই। তখন বাদীসহ তার স্বজনদের নিয়ে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে গোয়ালন্দ বাজার হতে দৌলতদিয়া ঘাটগামী রেল লাইন ব্রীজের ২০গজ দক্ষিণে রেল লাইনের পশ্চিম পাশে নিচু সমতল জায়গার দুই পাশে রাখা পাটকাঠির মাঝখানে বাদীর মেয়েকে নগ্ন অবস্থায় দেখতে পান এবং বাদী ও তার স্বজনেরা ঘটনাস্থল থেকে শরীফ বেপারী ও মিঠুকে ধরে ফেলেন এবং এসময় কয়েকজনকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেন। এসময় শরীফ বেপারী ও মিঠু বাদীর কাছে ক্ষমা চাইলে লোক লজ্জার ভয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন বাদী। পরদিন বাদী তার মেয়েকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদীর কাছে বিস্তারিত শুনে তাকে দ্রুত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু বাদী অর্থাভাবে হাসপাতালে যেতে পারেননি। পরে স্বজনদের পরামর্শে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে যান। ইউএনও তাৎক্ষনিক গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসিকে অবগত করেন। ওসির পরামর্শে রাতেই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে চিহিৃত চারজনসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও দুজনকে আসামী করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূক্তভোগী কিশোরীর এক স্বজন বলেন, গত শনিবার (২০ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টা থেকে ২টার মধ্যে যে কোন সময়ে ঘর থেকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ডেকে নিয়ে আসামীরা ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, মামলার পর রাতেই পৌর জামতলা এলাকা থেকে শরিফ বেপারী ও আলামিনকে এবং গোয়ালন্দ রেলষ্টেশন এলাকা থেকে মিঠু শেখকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই রাতেই ডাক্তারী পরিক্ষা শেষে বুধবার দুপুরে জবানবন্দি নিতে কিশোরীকে আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে কাজ করছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.