মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বীরগ্রামের কালু মিয়ার বাড়ি হতে পেংড়াপাড়া এবং খোট্টাপাড়া খেলার মাঠ হতে দড়িমুকন্দ পর্যন্ত রাস্তায় ভোগান্তিতে ৫টি গ্রাম, গাড়িদহ ইউনিয়নের কাফুড়া থেকে জয়নগর পর্যন্ত ৫ গ্রাম ও খানপুর ইউনিয়নের বোয়ালকান্দি পাকার মাথা থেকে নলবাড়িয়া গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। আর এই ৭ কিলোমিটার রাস্তায় এখনও পর্যন্ত উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শত শত মানুষ যাতায়াত করলেও রাস্তাটির উন্নয়ন না হওয়ায় মানুষের জীবনমান, কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই রাস্তা দিয়ে খোট্টাপাড়া, বীরগ্রাম, ভাদাইশপাড়া, রাজবাড়ী, বাঘমারা, হাতিগাড়া, কদিমুকন্দ ও পেংড়াপাড়া এই ৮টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে। বিশেষ করে এই অঞ্চলটি কৃষি ও মৎস্য খামার নির্ভরশীল এলাকা এখানে প্রায় ৫০টি ছোট-বড় পুকুরে মাছ চাষ করা হয়। কিন্তু রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় সময়মতো বাজারে মাছ পরিবহন করা সম্ভব হয় না, ফলে চাষিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন।
এছাড়াও, এই গ্রামগুলোতে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে ধান, মরিচ, আলু, পাটসহ নানা ফসল চাষ হয়। কিন্তু রাস্তার দুরবস্থার কারণে এসব ফসল পরিবহন করতে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়, ফলে অনেক কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। শুধু কৃষি নয়, শিক্ষার ক্ষেত্রেও পড়েছে মারাত্মক প্রভাব। ওই ৮টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা স্কুল ও কলেজে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিন কর্দমাক্ত ও ভাঙাচোরা অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়ছে এলাকার শিক্ষা। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে, তাকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পরায় জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে। এদিকে গাড়িদহ মডেল ইউনিয়নের কাফুড়া পূর্বপাড়া সালেমের বাড়ি হইতে জয়নগর পাকা রাস্তা পর্যন্ত হাফ কিলোমিটার রাস্তা পাকা না হওয়ার প্রায় ৫টি গ্রামের মানুষ ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে বাড়িতে যেতে হয়। কাফুড়া পূর্ব পাড়া গ্রামের আশরাফ আলী বলেন কাফুড়া বাজার হইতে হাজি রোড পাকা রাস্তা পর্যন্ত ও শুভগাছা গ্রামের বাছেদ প্রামানিকের বাড়ি হতে কাফুড়া বাজার পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হলে এলাকার উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে।
স্থানীয় বাসিন্দা খোট্টাপাড়া আব্দুল আজিজ, ইসমাইল, সোলাইমান বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে বসবাস করি কিন্তু মাত্র ৫ কিলোমিটার রাস্তার কারনে শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষিতে তেমন উন্নয়ন করতে পারছিনা। এই রাস্তা পাকা হলে আমাদের ৮টি গ্রাম আরো উন্নয়ন হতো।
বীরগ্রাম দড়িমুকুন্দ ও ভাদাইশপাড়া গ্রামের কালু, রঞ্জু মিয়া এবং রাইসুলসহ দশজন বলেন, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে অতি দ্রুত রাস্তা সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একদিকে উন্নয়ন হবে অন্যদিকে মানুষের ভোগান্তি দুর হবে।
বোয়ালকান্দি গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের এই রাস্তায় ধান লাগানোর উপক্রম হয়। বষার মৌসুমে সবাই প্রায় ঘরবন্দি থাকে। এই রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মির্জাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, রাস্তাটি নতুন প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আশা করছি সামনের বরাদ্ধ পাশ হয়ে আসবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সেলিম চৌধুরী হীরা কর্তৃক সম্পাদিত৷ https://www.dhurbar.com, ০১৯৭১-১০১৪২৯
Copyright © 2025 . All rights reserved.